মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের একটি টিনশেড ঘর থেকে দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
তারা হলেন জুয়েল (২৮) ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার (২২)। তারা দুজনেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান তাদের স্বজনেরা।
এ সময় (ঢামেক ) হাসপাতালে নিয়ে আসা নিহত গৃহবধূ নাসরিনের ভাই টিটু মিয়া জানান, জুয়েলের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তার বাবার নাম আজাদুর খন্দকার। আর নাসরিনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়। তার বাবার নাম সিদ্দিকুর রহমান। গত সাড়ে ৩ বছর আগে জুয়েল ও নাসরিনের বিয়ে হয়। তাদের একটি সন্তান জন্মের কয়েকদিন পর মারা যায়। এ বিষয়টি তাদের মাঝে বিরূপ প্রভাব ফেলে। গত ৮-১০ হলো তারা পূর্ব রামপুরার তিতাস রোডের একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া বাসায় উঠেন। প্রায় এক সপ্তাহ যাবত জ্বরে ভুগছিলেন নাসরিন।
তিনি বলেন,মঙ্গলবার দিনগত রাত পৌনে ১টার দিকে আমি কাজ থেকে বাসায় ফিরি। আমার স্ত্রী ও মেয়ের কাছে জানতে পারি দুপুরের পর থেকে নাসরিন ও জুয়েল তাদের রুমের দরজা খুলতে দেখেননি তাদেরকে রান্না করতেও দেখেননি। তখন আমি দরজা ধাক্কা দেই কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বিষয়টি বাড়িওয়ালাকে জানাই পরে দরজা খুলে দেন তিনি। এরপর ভেতরে ঢুকে দেখি একটি ফ্যানের হুকের সাথে দুইটি ওড়না বেঁধে আমার বোন ও ভগ্নিপতি গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িওয়ালা থানায় খবর দেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত্যু ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার বোন নাসরিন বাসা বাড়িতে কাজ করতো, তার জ্বর হবার পর থেকে সে কাজে যায় না। ভগ্নিপতি জুয়েলের কাজকর্ম না থাকায় হতাশায় ভুগতেছিল। ধারণা করা হচ্ছে এ সকল কারণেই আত্মহত্যা করতে পারে দুজন।
ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বিষয়টি রামপুরা থানা অবগত আছেন।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব রামপুরার তিতাস রোডের ওই টিনশেড বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়। রাতেই সিআইডি ক্রাইম সিন ঘটনাস্থলে আসে এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে।
ওসি জানান, আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে স্বামী-স্ত্রী একই ফ্যানের সঙ্গে আলাদা দুটি ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।